পহেলা বৈশাখ কি?
পহেলা বৈশাখ বা পয়লা বৈশাখ (বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ) বঙ্গাব্দের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। দিনটি সকল বাঙালি জাতির ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়।
পহেলা বৈশাখের ইতিহাস
পহেলা বৈশাখের যে উৎসব তার আতুড়ঘর, সৃষ্টির ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে রাজা-বাদশাহদের প্রাসাদে। নববর্ষ অর্থাৎ নতুন বছর, একেবারে নির্দিষ্ট করে বললে বলতে হয় নতুন বঙ্গাব্দর জন্ম মোগল বাদশাহ আকবরের দরবারে। আকবরই এই সনের প্রবর্তক।
এক সময় নববর্ষ পালিত হতো আর্তব উৎসব বা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। তখন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষির, কারণ কৃষিকাজ ছিল ঋতুনির্ভর। এই কৃষিকাজের সুবিধার্থেই মুগল সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০/১১ মার্চ বাংলা সন প্রবর্তন করেন এবং তা কার্যকর হয় তাঁর সিংহাসন-আরোহণের সময় থেকে (৫ নভেম্বর ১৫৫৬)। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌরসনকে ভিত্তি করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়। নতুন সনটি প্রথমে ‘ফসলি সন’ নামে পরিচিত ছিল, পরে তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত হয়।
সে সময় বাংলার কৃষকরা চৈত্রমাসের শেষদিন পর্যন্ত জমিদার, তালুকদার এবং অন্যান্য ভূ-স্বামীর খাজনা পরিশোধ করত। পরদিন নববর্ষে ভূস্বামীরা তাদের মিষ্টিমুখ করাতেন। এ উপলক্ষে তখন মেলা এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। ক্রমান্বয়ে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে পহেলা বৈশাখ আনন্দময় ও উৎসবমুখী হয়ে ওঠে এবং বাংলা নববর্ষ শুভদিন হিসেবে পালিত হতে থাকে।
পহেলা বৈশাখের অন্যরকম আবহ
বাঙালির সবচেয়ে বড় সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপনের মধ্য দিয়ে বরণ করা হবে নতুন বাংলা বছর ১৪৩১। এবারের পহেলা বৈশাখের অন্যরকম আবহ। ঈদের ছুটির পরপরই পহেলা বৈশাখ। আর তাই সরকারি বেসকারি চাকরিজীবী, পেশাজীবীরা ৬-৭ দিনের ছুটি পেয়েছেন। ঈদের আনন্দের পরপরই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আনন্দে মেতে উঠবে দেশবাসী। এমনটা এর আগে দেখা যায়নি খুব একটা।
পহেলা বৈশাখের রং কেন লাল-সাদা?
বৈশাখের চিরায়ত রং সাদা-লালের চল কেন বা কবে থেকে, এ নিয়ে রয়েছে মতভেদ।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বৈশাখের আয়োজন ছিল হালখাতা কেন্দ্রিক। হালখাতার মোড়কের রং লাল এবং ভেতরের পাতার রং সাদা। সেখান থেকে বৈশাখে সাদা-লাল আসতে পারে কিংবা মোগল আমলে বাদশাহকে খাজনা দেওয়ার সময় লাল সালু কাপড়ে বেঁধে দেওয়া হতো। সেই থেকেই লাল রং আমাদের বৈশাখে চলে এসেছে। অন্যদিকে সাদা হচ্ছে শুভ্রতার প্রতীক।। আবার হিন্দু নারীদের বৈশাখে পূজা-পার্বণে সাদা-লাল শাড়ি পরা থেকেও এই চল আসতে পারে। বাঙালির যেকোনো উত্সবেই লাল রঙের আধিপত্য লক্ষণীয়। যেহেতু বৈশাখের প্রথম দিন প্রায় সময়ই বেশ গরম থাকে, তাই স্বস্তির কারণেও সাদা-লাল সর্বজনীনতা পেয়েছে।
বাংলা নববর্ষের রীতি-নীতি
সম্রাট আকবরের শাসনামল থেকে পহেলা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও পরবর্তিতে বিভিন্ন বাঙ্গালি রীতি-নীতি আমাদের বর্ষ বরণে স্থান পেয়েছে। সেগুলোর কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো-
- গ্রামীন রীতি-নীতিঃ এ রীতি অনুসারে ভোর সকালে কৃষকেরা নতুন জামা গায়ে দিয়ে পরিবারের সাথে নানান পদের ভর্তা দিয়ে পান্তা ভাত, পিঠা-পুলি, মিষ্টি খেয়ে দিনটি সূচনা করে। তাছাড়া, কয়েকটি গ্রাম মিলে বৈশাখী মেলার আয়োজন করতো। সেখানে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরাও তাদের পণ্য মেলায় উঠাতেন। কেউ মাছ, কেউ খেলনা, কেউবা শাড়ি-চুড়ি, চুলের ফিতা। ধারণা করা হয় আমাদের ইলিশ মাছ খাবার ঐতিহ্য এই মেলা থেকেই এসেছে।
- রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ ও মঙ্গল-শোভাযাত্রাঃ প্রতি বছর রমনার বটমূলে ছায়ানটের গানের অনুষ্ঠান থাকে। সূর্য উঠার সাথে সাথে নতুন বছরের মঙ্গল কামনায় রমনার বটমূল গানে গানে মুখরিত হয়ে উঠে। সকলে মিলে একই সুরে গেয়ে ওঠে-“এসো, হে বৈশাখ এসো এসো”। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে গ্রামীন সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন মুখোশ ও মুর্তি বানিয়ে ঢাকার রাস্তায় শোভাযাত্রা করে বরণ করা হয় নতুন বছরকে। এই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারে সকলেই।
- প্রাচীন বউমেলা ও ঘোড়ামেলাঃ সোনারগাঁও এ ঈসা খাঁ এর আমলে বউমেলা হতো। সেখানে স্থানীয় বটতলায় কুমারী, নববধূ ও মায়েরা তাদের মনের ইচ্ছা পূরণে পূজা করতো। পাঁঠা বলি দেয়া হতো আগে। তবে এখন শান্তির বার্তার আশায় তারা দেবীর কাছে কবুতর বা পায়রা উড়িয়ে দেয়। এছাড়াও সোনারগাঁও এ ঘোড়ামেলারও প্রচলন ছিলো। লোকমুখে প্রচলিত আছে যে, আগে যামিনী সাধন নামের এক ব্যক্তি নববর্ষের দিন ঘোড়া চড়ে সবাইকে প্রসাদ দিত। তার মৃত্যুর পরে সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হয় এবং পরবর্তীতে এটিকে কেন্দ্র করে মেলার আয়োজন হয়। আগে মাটির ঘোড়া রাখা হতো, এরপর থেকে মেলায় নাগর-দোলা, চরকা, ঘোড়ার আকারে ঘূর্ণী দোলনা রাখা হয়।
পহেলা বৈশাখের আমেজে বৈশাখী শাড়ি
বাঙালি নারীর কাছে শাড়ি হলো সৌন্দর্যের ব্যাকরণ। উৎসবে-পার্বণে বাঙালি নারীরা শাড়িকেই বেছে নেন। আর সেই উৎসব যদি হয় বাংলা নববর্ষ, তবে নারীদের পছন্দের তালিকায় অবশ্যই সবচেয়ে ওপরে থাকে শাড়ি।
আপনার পহেলা বৈশাখকে রাঙ্গিয়ে তুলতে এবারে মেহজিন ব্রান্ড অসাধারণ কিছু শাড়ির কালেকশন নিয়ে হাজির হয়েছে।
তুলিঃ ব্লেন্ডেড তসর সিল্কের দারুন কোমল এক শাড়ি, যার নাম দেওয়া হয়েছে তুলি। আকর্ষণীয় শাড়িটি বৈশাখে আপনাকে অন্যদের চেয়ে আরো বেশি সুন্দর করে তুলবে।
পালকিঃ ব্লেন্ডেড তসর সিল্কের আরেকটি শাড়ি, যার নাম দেওয়া হয়েছে পালকি। আকর্ষণীয় শাড়িটি বৈশাখে আপনাকে অন্যদের চেয়ে আরো বেশি সুন্দর করে তুলবে।
শোভাঃ ব্লেন্ডেড তসর সিল্কের আরেকটি শাড়ি, যার নাম দেওয়া হয়েছে শোভা। আকর্ষণীয় শাড়িটি বৈশাখে আপনাকে অন্যদের চেয়ে আরো বেশি সুন্দর করে তুলবে।
বৈশাখে নিজেকে সবার সামনে আরো আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে আপনার পছন্দের শাড়ি এখুনি অর্ডার করুন, স্টক লিমিটেড।
পছন্দের শাড়িটি অর্ডার করতে অনলাইনে অর্ডার করতে আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার ও ঠিকানাসহ ইনবক্স করুন- m.me/mehzin.retail
অথবা, সরাসরি আমাদের আউটলেট থেকে পার্চেজ করুন।
আউটলেট লোকেশনঃ এফ এস স্কয়ার, লেভেল-৩, শপ নাম্বার
৪২৮-৪২৯, মিরপুর ১০ গোলচত্তর মেট্রোরেল স্টেশনের সাথে, মিরপুর ১০, ঢাকা।