থ্রি পিস কি?

মেয়েদের অন্যতম ভালোবাসার জায়গা থ্রি পিস। থ্রি পিসের মধ্যে থাকে একটি কামিজ (জামা), একটি সালোয়ার এবং একটি ওড়না। এই তিনের সমন্বয়ে থ্রি পিস। বাঙালি মেয়েদের পরিধানে শাড়ির পর সব থেকে বেশি যে পোশাকটি দেখতে পাওয় যায় তার নাম হল থ্রি পিস বা সালোয়ার কামিজ।

থ্রি পিস - প্রচলনের ইতিহাস

প্রাচীনকালে সালোয়ার কামিজের দেখা মেলেনি, এমনকি চর্যাপদে এই পোশাকের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাহলে বাঙালিয়ানায় এ পোশাক যুক্ত হলো কিভাবে?

শুরুর দিকে মঙ্গোল যুগে, সালোয়ার কামিজ কে মুসলিম পোশাক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। দ্বাদশ শতাব্দীতে তিমুরিদ আক্রমণ করে আমাদের এই উপমহাদেশে। তিমুরিদ রাজবংশ, তুর্কি-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত রাজবংশ বিজেতা তৈমুর (টেমেরলেন) থেকে এসেছে। যারা সাথে করে যাযাবর পোশাক হিসেবে নিয়ে আসে এরকম হাবভাবের পোশাক। 

সেই সময়ে নারীদের পোশাক ছিলো কোমরের উপর একটু আটসাট করে ফিটিং করা যা এখন আমাদের লং গাউন, আনারকলী এসবের সাথে মিলে যায় এবং তখন তারা এই পোশাকের সাথে ওড়না ও ব্যবহার করতো।

প্রথম দিকে রাজ কাজে বাদশাহের পরিবারে এসব পোশাক পরিধান করা হলেও পরবর্তীতে অভিজাত পরিবারে এবং তার ও পরে গ্রামের ধনীদের এসব পোশাক পরতে দেখা যায়। এরপর বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ এসব পরিধান করা শুরু করে। যা পরে মুঘল সাম্রাজ্যে আরো পরিবর্তন করা হয়। তৈমুরদের বংশধরেরা প্রতিষ্ঠা করেছিলো মুঘল সাম্রাজ্য। 

সঠিক সময় কাল জানা না গেলেও ধারনা করা হয় যে মুঘল আমল থেকেই থ্রি পিসের প্রচলন শুরু হয়। তবে তখনো এর জনপ্রিয়তা তেমন চোখে পরার মত ছিল না। আরো কয়েক শতাব্দী পর, ৮০/৯০ দশকের বলিউড সিনেমার বদৌলতে সালোয়ার কামিজের নাম ছড়িয়ে পরে জনসাধারণের মুখে মুখে। এজন্য মুঘল সাম্রাজ্য কে বলা হয় টেক্সটাইল কারুশিল্পের স্বর্ণযুগ।

বিভিন্ন প্রকারের থ্রি পিস

মেয়েদের অন্যতম ভালোবাসার জায়গা থ্রি পিস। থ্রি পিসের মধ্যে থাকে একটি কামিজ (জামা), একটি সালোয়ার এবং একটি ওড়না। এই তিনের সমন্বয়ে থ্রি পিস। বাঙালি মেয়েদের পরিধানে শাড়ির পর সব থেকে বেশি যে পোশাকটি দেখতে পাওয় যায় তার নাম হল থ্রি পিস বা সালোয়ার কামিজ।

ল'ন থ্রি পিসঃ ল’ন থ্রিপিসের নাম শুনেন নি এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুস্কর। ল’ন/ LAWN নামটি এসেছে ফ্রান্স এর LAON শহরের নাম থেকে।এই শহর থেকেই ল’ন এর উৎপত্তি হলেও ভারত ও পাকিস্তানে এর ব্যাপক উৎপাদন ও এর মাধ্যমে এর জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রথমে শুধু ভিসকস/দামী লিনেন সুতা দিয়ে তৈরি হলেও।পরবর্তীতে ১০০% কটন সুতা দিয়ে তৈরী করা হতো বলে আরামদায়ক , দামেও সস্তা ও বহুল জনপ্রিয় হয়ে উঠে ল’ন থ্রি পিস,চলে আসে সব শ্রেণির ক্রেতাদের হাতের নাগালে। 

শুরুর দিকে ১০০% কটন এর সুতা দিয়ে তৈরী হতো বলে এই কাপড় হতো অনেক স্বচ্ছ ও পাতলা,ফলে কোন অর্নামেন্টাল হাত/মেশিনের কাজ করা যেতো না,তাই পাকিস্তান ও ইন্ডিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশেও ৫০% কটন ও ৫০% ভিসকস সুতা দিয়ে ল’ন তৈরী করা হয়।তাতে কাপড়ের গঠন অনেকটাই মজবুত হয়ে দৈনন্দিন ব্যবহারের ও উপযোগী হয়ে উঠে। ল’ন কাপড় ভয়েল ও অরগ্যান্ডির মাঝামাঝি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ।অর্থাৎ ভয়েলের চাইতে কম স্বচ্ছ ও অরগ্যান্ডির চাইতে বেশি নরম। ল’ন কাপড়ে সাধারনত কটন সুতার কাউন্ট থাকে ৭০ আর ভিসকস/পলিস্টার সুতার কাউন্ট থাকে ১০০।

কটন জামদানি থ্রি-পিসঃ জামদানি থ্রি-পিসগুলো কখনোই পিউর কটনের উপর তৈরি হয় না ৷ অনেকের ই ধারনা এই থ্রি-পিসগুলো পিউর কটনের উপর তৈরি করা হয় ৷ এই ধারণাটি একেবারেই সঠিক নয়৷ এই থ্রি-পিসগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো মূলতঃ মিক্সড কটন সূতায় তৈরি করা হয় ৷ অর্থাৎ পিসি (পলিষ্টার কটন) সূতায় তৈরি হয় কিংবা তসর কাপড়ের উপর তৈরি করা হয় ৷ তবে সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় পিসি সূতায় ৷ তাই এই থ্রি-পিসগুলো পরতে অনেক আরামদায়ক হয় এবং বাজেট ফ্রেন্ডলি হয় ৷ তাইতো এই থ্রি-পিসগুলোর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ থাকে অনেক অনেক গুন বেশি ! দিন দিন এর চাহিদা আরো দ্বিগুণ বেড়ে চলেছে ৷

সুতি থ্রি পিসঃ আরামদায়ক পোশাক পরতে হলে সুতি কাপড়ের বিকল্প নেই। কারণ সুতি হলো প্রাকৃতিক ফেব্রিক। তুলা থেকে তৈরি হয় সুতা। এরপর ওই সুতা থেকে তৈরি হয় সুতির পোশাক। আসল সুতি কাপড়ের বুনন হবে পাতলা। গরমের সিজনে সুতি থ্রি পিস পরার মত আরমাদায়ক আর কিছু হতেই পারে না। আরামদায়ক বলে অনেকেই এক কালার কামিজ ডিজাইন ওয়ান পিস কালেকশন পরিধান করতে বেশি পছন্দ করছেন।

আনস্টিচড, সেমি-স্টিচড অথবা রেডিমেডঃ সব ধরনের থ্রি পিসের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। আকর্ষণীয় রঙে রুপে এসব সালোয়ার কামিজ এখন টেক্কা দিচ্ছে দামি স্যুট কিংবা ওয়েস্টার্ণ ড্রেসকে। জর্জেট থ্রি পিস, কাতান থ্রি পিস, তাঁতের থ্রি পিস, পাকিজা থ্রি পিস ইত্যাদি সালোয়ার কামিজ কালেকশন গুলো মেয়েরা এখন পরিধান করছে সারা বছর জুড়েই। ফ্যাশন সচেতন মেয়েরা আনস্টিচড থ্রি পিসে ফুটিয়ে তুলছে তাদের নিজস্ব সৃজনশীলতা, সেক্ষেত্রে ডিজাইনে ভিন্নতা আনার জন্য থ্রি পিসের হাতার ডিজাইন এবং গলার ডিজাইনে জোড় দেয়া হচ্ছে বেশি। অন্যদিকে রেডিমেড কাজ করা থ্রি পিসেও থাকছে চোখ ধাঁধানো রঙ আর নকশার ছটা।

সিল্কের থ্রি পিসঃ ‘সিল্ক’ ইংরেজি শব্দ, বাংলায় রেশম। রাজশাহী পরিচিত হয় ‘রেশম নগরী’ হিসেবেই। যুগ-যুগান্তর থেকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের রুচি ও ফ্যাশন নিত্যনতুন বদলাচ্ছে। কিন্তু এত ফ্যাশনের ভিড়ে আজও অমলিন রেশমের ঐতিহ্য। হাজার পণ্যের মধ্যেও বাঙালি সংস্কৃতিতে রেশমের আভিজাত্য এক রত্তিও কমেনি। বছরের অন্য সময় তো বটেই; ঈদ-পরবে তো কথাই নেই। রেশমি পোশাক যেন চাই-ই চাই। আর যখনই কোথাও রেশমের কথা উঠবে। তখনই মনে পড়বে উত্তরের শহর রাজশাহীর নাম।

বিবিধঃ বিয়ে কিংবা পারিবারিক অনুষ্ঠানে গাউন এর পরিবর্তে গাউন থ্রি পিস কিংবা ভারী পাঞ্জাবী, গুজরাটি স্টাইল সারারা সালোয়ার পরাটাই এখন মেয়েদের ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। রঙিন সুতার এমব্রয়ডারি থ্রি পিস অথবা সালোয়ার কামিজে প্রিন্ট ডিজাইন এখন বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। এছাড়াও ফ্যাশন প্রিয় তরুনীদের এখন পছন্দের শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানি লোন থ্রি পিস, ফেরদৌস লোন থ্রি পিস দেশি ডিজাইনের মধ্যে রয়েছে শাপলা থ্রি পিস কালেকশন। রঙ বেরঙ্গের কাজ করা থ্রি পিস কিনতে রমনীরা বাছাই করছে ব্লক বাটিক ডিজাইনের থ্রি পিস।

গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখেই আকর্ষণীয় কালেকশন লঞ্চ করেছে মেহজিন ব্রান্ড। তাহলে আর দেরি কেন? এখুনি সংগ্রহ করুন আপনার পছন্দের কালেকশন।

তাহলে আর দেরি কেনো? এখুনি যোগাযোগ করুন

আপনার পছন্দের থ্রি পিসের স্টক শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করুন। অথবা, সরাসরি আমাদের শো রুমে ভিজিট করে, আকর্ষণীয় মূল্য ছাড়ে আপনার পছন্দের থ্রি পিস সংগ্রহ করুন। 

পছন্দের থ্রি পিস অনলাইনে অর্ডার করতে আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার ও ঠিকানাসহ ইনবক্স করুন- m.me/mehzin.retail

অথবা, সরাসরি আমাদের আউটলেট থেকে পার্চেজ করুন।

আউটলেট লোকেশনঃ এফ এস স্কয়ার, লেভেল-৩, শপ নাম্বার
৪২৮-৪২৯, মিরপুর ১০ গোলচত্তর মেট্রোরেল স্টেশনের সাথে, মিরপুর ১০, ঢাকা।