ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা লেখক, কথা সাহিত্যিক সমরেশ বসু, বলেছেন “অনুগ্রহ আর সংস্কৃতি যখন হাত মিলিয়েছিলো, তখন শাড়ি জন্ম নিয়েছিলো”। শাড়ি হল এমন একটি পোশাক যা পড়লে বাংলার মেয়েদের রূপকে আরও বেশি সুন্দর করে তোলে। শাড়ি পারে একটি মেয়ের সৌন্দর্য আরো দ্বিগুন বৃদ্ধি করতে। বাঙালি মেয়েরা শাড়ি পরতে অনেক বেশি পছন্দ করে থাকেন। বছরের নতুন দিন, পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন, বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন পার্টি এছাড়া অনেক অনুষ্ঠানে তারা শাড়ি পরিধান করা বাঙ্গালী নারীদের ঐতিহ্য।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেয়েরা তাদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে তারা বিভিন্ন ধরনের রং বেরঙ্গের শাড়ি পরিধান করে থাকেন। যেমন তাঁতের শাড়ি, কাতান শাড়ি, বিভিন্ন ধরনের সিল্ক শাড়ি, এছাড়া এখন নতুন পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক এর শাড়ি। আবার আছে নকশী শাড়ি, মেয়েরা তাদের শাড়িতে নিজেদের ইচ্ছেমতো বিভিন্ন ধরনের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলেন, কেউ কেউ পরে ফেব্রিক এর মাধ্যমে রং তুলি দিয়ে আবার কেউবা পরে সুই সুতা দিয়ে নিজের মতো করে শাড়ি। এ শাড়ি গুলো পরলে মেয়েদের সৌন্দর্য আরো দ্বিগুন বৃদ্ধি পায়। এছাড়া বেনারসি শাড়ি, মসলিন শাড়ি, জামদানি শাড়ি, জর্জেট শাড়ি এগুলো বাংলার নারীরা বেশি পরিধান করে থাকেন।

এছাড়া এখনকার মেয়েরা নিজের পছন্দমত শাড়িতে চুমকি এবং জরি দিয়ে বিভিন্ন রূপে শাড়ীকে সাজ্জিত করে থাকেন। কোন কোন শাড়িতে পাওয়া যায় বাংলার রূপ বৈচিত্র, আবার কোন কোন শাড়িতে পাওয়া যায় বিভিন্ন সাহিত্যিকদের ছবি, আবার কোন কোন শাড়ীতে দেখা যায় বিভিন্ন আলপনা। এরকম শাড়ি দেখলে বাংলার প্রাচীন বাংলাকে স্মরণ করিয়ে দেয় সবার মাঝে। এ শাড়ি বিদেশেও খুব প্রচলন রয়েছে। তারাও এরকম শাড়ি পড়তে খুব পছন্দ করে। কারণ কথায় আছে শাড়িতেই নারী।

শাড়ি হচ্ছে এমন একটি পরিধেয় বস্ত্র যা নারীদের রূপ বৈচিত্র কে এক নতুন রূপে সজ্জিত করে তুলে। এছাড়া শাড়ি হচ্ছে আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার একটি মাধ্যম। বারো হাত হচ্ছে শাড়ি, যা নারীদের সৌন্দর্যকে গরে তোলে এক অপরূপ বৈচিত্রে। যা অন্য পোশাক পড়লে নারীকে এতটা সুন্দর কখনো লাগবে না।  তাই বলা হয় শাড়ি ছাড়া নারীকে অন্য  পোশাকে কোনদিনই মানাবে না। সেজন্য বাংলার রূপ বৈচিত্র কে টিকিয়ে রাখতে হলে শাড়ির কোন বিকল্প উপায় নেই বলা চলে। তাই সবার একটি কথাই মেনে চলতে হবে শাড়ির মাধ্যমেই আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে পারি। আর শাড়ির কদর শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বব্যাপী শাড়ির কদর রয়েছে অপরিসীম।

বিভিন্ন উৎসব মানেই মনে হয় নারীদের শাড়ির কদর কেমন তা বুঝা যায়। শাড়ির দোকান গুলোতে উপচে পড়া ভিড় থাকে নারীদের। যা দেখলে বোঝা যায় বাংলাদেশের নারীদের শাড়ির কদর কত বেশি। এছাড়া বাংলাদেশি শাড়ি বিশ্বে অনেক প্রচলন রয়েছে। বাংলার জামদানি মসলিন কাতান যা অন্য দেশের  থেকে অনেক গুনে ভালো, যার কদর সারা জীবনই অনেক রয়েছে এবং থাকবে। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি শাড়ির জন্য বিখ্যাত।

নিত্য নতুন পোশাকের আধুনিকায়ন হলেও বাঙালি নারীর শাশ্বত সৌন্দর্য ফুটে ওঠে কেবল শাড়িতেই শুধু। শাড়ির চিরন্তন আবেদন আজও অমলিন রয়ে গেছে। ১২ হাত একখানা শাড়ির সৌন্দর্যের কাছে যেন হার মানে অন্য সব দামি দামি পোশাক। আর তাই তো বাঙালি নারীদের কাছে শাড়ি খুব শখের একটি পোশাক।