কটন শাড়ি কি?

কটন শাড়ি হল বাংলাদেশের নারীদের জন্য সব থেকে আরাম দায়ক শাড়ি। আসলে আমরা কটন বলতে কি বুঝি। কটন হল সুতা যা দিয়ে কাপড় তৈরি করা হয়। কটন শাড়ির মধ্যে আবার কিছু প্রকারভেদ রয়েছে যেমন, ১০০% কটন, ৯০% কটন এভাবে সম্পুর্ন কাপড়ে কটনের পরিমান মাপা হয়। ব্যাবহারে আরামের দিক দিয়ে সব থেকে ভালো হল ১০০% কটন শাড়ি গুলা। গরমে সব থেকে বেশী আরামদায়ক হয় এই কটনের শাড়ি গুলা।যখন শাড়িতে কটনের পরিমান কম থাকে এবং পলিস্টার কাপড়ের পরিমান বেশী থাকে তখন ঐ শাড়ি গরমের দিনে আরামদায়ক না হলেও শীতের দিনের জন্য আরামদায়ক। 

কটন শাড়ি কত ধরনের?

কটন শাড়ি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু কটন শাড়ির ধরন হচ্ছে মাসলাইস কটন, এক কালারের কটন শাড়ি, হ্যান্ডলুম কটন শাড়ি, খাদি কটন শাড়ি, এন্ডি কটন শাড়ি, এছাড়াও মাদুরাই কটন শাড়ি। এগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
 

খাদি কটন শাড়ির বৈশিষ্ট্য

খাদি শাড়ি মূলত হাতে বুনা সুতা দিয়ে তৈরি করা হয়। খাদি শাড়িতে সম্পূর্ন খাদি সুতা ব‍্যবহার করা যায়না কারন খাদি সুতা খুবই মোটা ধরনের হয়। কাউন্ট হিসেব করে খাদি সুতার সাথে কটন সুতা মিক্স করে দেওয়া হয়। খাদি শাড়ি স্টাইপ করে পুরো শাড়িতে এবং আচলে খাদির সুতার বাইন টানা হয়। খাদি খদ্দর থেকে উদ্ভূত হয়েছে একটি হাতে কাটা ও বোনা প্রাকৃতিক তন্তু কাপড় যা মহাত্মা গান্ধী ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য স্বদেশী (স্বয়ংসম্পূর্ণতা) হিসাবে প্রচার করেছিলেন এবং শব্দটি ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জুড়ে ব্যবহৃত হয়। হাতে বোনা কাপড়ের প্রথম টুকরোটি ১৯১৭-১৮ সালে সবরমতী আশ্রমে তৈরি করা হয়েছিল। কাপড়ের অমসৃণতাকে গান্ধী খাদি বলে অভিহিত করেন।

এক কালার কটন শাড়ি

কটন শাড়ি গুলা বাহারি কালার এবং বাহারি ডিজাইনের হয়ে থাকে। এক এক জনের চাহিদা এক এক রকমের হয়ে থাকে অনেকের পছন্দ বাহারি কালার আবার অনেকের এক কালার।এক কালারের অনেক কটন শাড়ি রয়েছে আপনার যদি মনে হয় এক কালার কটন শাড়ি দরকার তাহলে বাংলাদেশের সব থেকে বড় অনলাইনে শাড়ি বিক্রির পেজ এবং ওয়েবসাইট মেহ্‌জিনে ঘুরে আসতে পারেন সে খানে আপনি পছন্দ অনুযায়ী অনেক এক কালার বাহারি কালার সব লেটেস্ট শাড়ির কালেকশন পেয়ে যাবেন।সাধারনত আমাদের দেশের মেয়েদের পছন্দের তালিকায় সব সময়ই বাহারি কালার পছন্দ করে থকেন কারন বডি এক কালার হলেও সবার পছন্দে অন্য ডিজাইন বা অন্য কালারের পাড় সবার পছন্দ।

মাসলাইস কটন শাড়ি

সুতার জগতে সব থেকে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির সুতা হল মাসলাইস কটন সুতা আর এই সুতা দিয়েই তৈরি করা হয় মাসলাইস কটন শাড়ি।এই সুতা গুলা অনেক চিকন ও মিহি হয়ে থাকে।আদি কাল থেকেই এই শাড়ি গুলা বাংলাদেশের তাতিরা তৈরি করে কিন্তু এই শাড়ি গুলা বুনতে খরচ বেশী হওয়ায় বাংলাদেশে আগে মানুষ এই শাড়ি গুলা খোলা বাজারে কিনতে পারত না। এই শাড়ি গুলা ইন্ডিয়াতে পাঠানো হত আর বাংলাদেশের যারা বড় লোক ছিল এমন কিছু মানুষ এই শাড়ি গুলা ব্যবহার করত।কিন্তু করোনার মহামারির সময় এই শাড়ি গুলা দেশের বাহিরে রপ্তানি না হতে পারার কারনে দেশের বাজারে এই শাড়ি গুলা বিক্রি হওয়া শুরু হয় এবং সবাই এই শাড়ি গুলাকে ইন্ডিয়ান শাড়ি বলে কিনতে থাকে।এই শাড়ি গুলার ডিজাইন ইন্ডিয়ান প্যাটার্নের হওয়ায় সবাই এটাকে ইন্ডিয়ান শাড়ি বলে চালাতে থাকে আর আসলে এই শাড়ি গুলা বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতিদের দারা তৈরি। মাসলাইস সুতা গুলা পলিশ করে চিকন করা হয় তাই এই শাড়ি গুলা পরিধান করতে অনেক আরাম দায়ক।চিকন সুতার কারনে এই শাড়ি গুলা তৈরি করার সময় ফিনিশিং অনেক ভালো হয়।মাসলাইস শাড়ি যদিও কটন শাড়ি কিন্তু দেখতে অনেকটা সিল্ক শাড়ির মত গ্লেজ করে।এই শাড়ির পাড়ে গোল্ডেন জরির কাজ করা থাকে তাই দেখতে আরোও সুন্দর লাগে। মাসলাইস শাড়ি যে কোন অনুষ্ঠানে পরিধান করে যাওয়া যায় বিশেষ করে অফিস অনুষ্ঠান,ফ্যামিলি অনুষ্ঠান, বিয়ে বাড়িতে, স্কুল ও কলেজের পার্টিতে পড়ে যাওয়ার জন্য সব থেকে বেশী উপযোগী।

মাসলাইস কটন শাড়ির বৈশিষ্ট্য

সাধারনত কটন সুতাকে মার্সেরাইজেসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাসলাইস কটন সুতা তৈরি করা হয়।মার্সেরাইজেসন হল একটি ক্যামিকাল মধ্যম যা মার্সেরাইজ মেশিন ব্যবহার করে করা হয়।যেহেতু মাসলাইস কটন শাড়ি গুলা এই প্রসেসে তৈরি হয়ে থাকে তাই এক শাড়ি গুলা অন্য সকল শাড়ি থেকে অনেক আলাদা।এই শাড়ি গুলা অনেক যত্ন  সহকারে তৈরি করা হয় এবং অনেক আমারদায়ক হয়ে থাকে পরিধানের জন্য। মাসলাইস শাড়ি ডিজাইনের দিক দিয়ে অন্যসকল শাড়ির থেকে অনেক বেশী ইউনিক এবং গরম ও শীতকাল সব সময়ই এই শাড়ি গুলা ব্যবহার করা যায় ।

কেন মাসলাইস কটন শাড়ি কিনবেন

বাংলাদেশের ট্রেডিশন অনুযায়ী আমরা যখন কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ভাবি আগে থেকে আমরা প্লান করি ঐ অনুষ্ঠানে আমরা কি শাড়ি পরিধান করব। এই সকল ক্ষেত্রে নারীদের সবার পছন্দের শীর্ষে রয়েছে মাসলাইস কটন শাড়ি। শীত, গরম বর্ষা যে সিজনে হোক মাসলাইস শাড়ি অনেক আরামদায়ক। একজন নারীকে সুন্দর দেখানোর জন্য যা প্রয়োজন তা এই শাড়ির মধ্যে আছে।আপনাকে ন্যাচারাল ভাবে সকলের সামনে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলবে এই শাড়ি। মাসলাইস শাড়ির বডি ও পাড়ের কালালের কম্ভিনেশন অনেক অনেক সুন্দর। যে কোন মেয়েকে এই শাড়ি কিনার জন্য আকৃষ্ট করে তুলবে।

মাসলাইস কটন শাড়ির দাম

সাধারনত আমরা যখন কোন কিছু কিনার কথা চিন্তা করি তখন তার দাম বা বাজেট নিয়া আমরা প্রথমে ভাবি।মাসলাইস কটন শাড়ি অন্য সকল শাড়ির থেকে ডিজাইন বা গুনগত মানে ভালো হওয়ার কারনে সাধারন শাড়ির থেকে এর দাম একটু বেশী।এই শাড়ি তৈরি করার জন্য সুতা যেভাবে প্রসেস করা হয় সুতা তৈরিতে খরচ একটু বেশী আর এই শাড়ি গুলা এখন আপনি বাংলাদেশে অনেক যায়গায় পেয়ে যাবেন কিন্তু আসল ও নকলের জন্য আপনি আপনার নিকটস্থ ভাল দোকানে পেয়ে যাবেন। আর অনলাইনে যদি মাসলাইস শাড়ি কিনতে চান তাহলে মেহ্‌জিনের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ আপনার জন্য সব থেকে ভালো চয়েজ। এই শাড়ির দাম সাধারনত ১৮০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। যদি আপনারা ভালো কিছু চান তাহলে মেহ্‌জিন আপনার জন্য সব থেকে ভালো পছন্দ। 

কম দামে মাসলাইস কটন শাড়ি

আমরা অনেকে দামের কথা চিন্তা করে সব সময় কম দামে কোথা থেকে কিনতে পারা যায় এটা নিয়ে ভাবি। অনেক সময় কম দামে কিনতে যেয়ে আমরা ধোকার শিকার হয়ে নকল জিনিস কিনে নিয়ে বাড়িতে আসি।আপনি যদি রিজনেবল প্রাইছে অরিজিনাল মাসলাইস শাড়ি কিনতে চান তা হলে আপনাকে ঘুরে আসতে হবে মেহ্‌জিনের ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজে। যেখানে সল্প দামে আপনি অরিজিনাল মাসলাইস শাড়ি পেয়ে যাবেন। মাসলাইসের সব থেকে সুন্দর এবং নিউ নিউ কালেকশন আপনি অনলাইনে মেহ্‌জিনে পেয়ে যাবেন।যেখানে সেখানে যেয়ে ধোকা না খেয়ে আপনার ব্যবহৃত স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার থেকে দেখে আসতে পারেন মেহ্‌জিন পেজটি।দামে এবং মানে দুটাতে আমরা বলতে পারি অন্য সকল দোকান বা অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে মেহ্‌জিন ভালো।

অরিজিনাল মাসলাইস কটন শাড়ি

মাসলাইস শাড়ির ক্ষেত্রে যখন অরিজিনাল আর ডুপ্লিকেটের কথা আছে তখন অনেক কিছু আমাদের মাথায় ঘুরে আজ এর সমাধান আমরা দেখব। আমাদের দেশের অনেক মনে করেন যদি মাসলাইস শাড়ি ইন্ডিয়া থেকে আসে তাহলে অরিজিনাল নাহলে নকল,কিন্তু ব্যাপারটা আসলে এমন না, এটা একটা ভুল ধারনা কারন মাসলাইস শাড়ি গুলা তৈরি করে আমাদের দেশের তাতীরা। মাসলাইসের অরিজিনাল শাড়ি তৈরি করা হয় বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলাতে সে খানের তাতীরা তৈরি করে অরিজিনাল মাসলাইস শাড়ি এবং তা রপ্তানি করা হয় ইন্ডিয়াতে। সাধারনত এই শাড়ি গুলা দামী হওয়ার কারনে বাংলাদেশের বাজারে  এব্যাইলেবল ছিলনা, কিন্তু করোনা মহামারির সময় রপ্তানি বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের বাজারে প্রথম পরিচিতি পায় ইন্ডিয়ান শাড়ি নামে।