তসর—শব্দটা শুনলেই যেন একধরনের আভিজাত্য, ঐতিহ্য আর নান্দনিকতার গন্ধ মেলে। যুগ যুগ ধরে আমাদের উপমহাদেশের নারীদের পোশাক-সংস্কৃতিতে তসর সিল্কের এক অনন্য স্থান রয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন তসরও এসেছে নতুন রূপে—ব্লেন্ডেড তসর নামে। আজকের এই লেখায় আমরা জানব, প্রিমিয়াম ব্লেন্ডেড তসর আসলে কী, কেন এটি এত জনপ্রিয়, এবং আধুনিক ফ্যাশনপ্রেমীদের কাছে এর আবেদন কোথায়।
তসর সিল্কের উৎপত্তি ভারত ও চীনে হলেও, আমাদের দেশের ফ্যাশনপ্রেমীদের কাছে এই কাপড়ের কদর বরাবরই ছিল বেশি। খাঁটি তসর তৈরি হয় বিশেষ ধরনের রেশম পোকার সুতা দিয়ে, যা আমাদের দেশের আবহাওয়ায় উৎপাদন সম্ভব নয়। তাই স্থানীয়ভাবে অ্যান্ডি সিল্ক বা পলিয়েস্টার সুতার সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় তসর-জাতীয় কাপড়, যাকে আমরা ব্লেন্ডেড তসর বলি। এতে খরচ কম, টেকসই বেশি, আবার রঙ ও ডিজাইনের বৈচিত্র্যও অনেক।
ব্লেন্ডেড তসর বলতে সাধারণত বোঝায়, তসর সিল্কের সঙ্গে অন্য কোনো সুতা—যেমন কটন, পলিয়েস্টার বা ভিসকোস—মিশিয়ে তৈরি কাপড়। এতে মূল তসর সিল্কের স্বাভাবিক টেক্সচার, ঝলমলে ভাব আর হালকা সোনালি উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। আবার অন্য সুতার সংমিশ্রণে কাপড়টি হয়ে ওঠে আরও টেকসই, সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং তুলনামূলকভাবে কম দামে পাওয়া যায়।
বাজারে ব্লেন্ডেড তসর পাওয়া গেলেও, ‘প্রিমিয়াম’ ব্লেন্ডেড তসর মানে শুধু সাধারণ ব্লেন্ড নয়—এখানে মান, ফিনিশিং, ডিজাইন ও আরাম—সবকিছুতেই থাকে বাড়তি যত্ন। যেমন, মেহজিনের প্রিমিয়াম ব্লেন্ডেড তসর শাড়িগুলো ডিজিটাল প্রিন্ট ও টার্সেল ওয়ার্কে তৈরি, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩.৫ হাত এবং বহর ২.৫ হাত (৪৬ ইঞ্চি)। প্রতিটি শাড়ির সঙ্গে রানিং ব্লাউজ পিসও থাকে, ফলে পুরো সেটটাই একসঙ্গে পাওয়া যায়।
প্রিমিয়ام ব্লেন্ডেড তসর শাড়ির ডিজাইনে থাকে আধুনিকতার ছোঁয়া। ডিজিটাল প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, ভেজিটেবল ডাই, বাটিক—নানান কাজের সমন্বয় দেখা যায় এই শাড়িগুলোতে। ফলে একদিকে যেমন ঐতিহ্যবাহী তসর সিল্কের আভিজাত্য বজায় থাকে, অন্যদিকে আধুনিক ডিজাইনের কারণে যেকোনো বয়সের ও রুচির নারীদের কাছে এগুলো সমান জনপ্রিয়।
আজকাল শুধু শাড়ি নয়, ব্লেন্ডেড তসর দিয়ে তৈরি হচ্ছে পাঞ্জাবি, শার্ট, ওড়না, স্কার্ফ, শ্রাগ, কেপ, জ্যাকেট, কোটিও। ফিউশন ফ্যাশনের যুগে ব্লেন্ডেড তসর হয়ে উঠেছে ডিজাইনারদের প্রিয় মাধ্যম। কারণ, এতে যেমন ঐতিহ্যবাহী ছোঁয়া থাকে, তেমনি আধুনিক নকশা, রং ও কাটিংয়ের বৈচিত্র্য সহজেই আনা যায়।
মেহজিনের ব্লেন্ডেড তসর সংগ্রহে প্রতিটি শাড়ি ডিজিটাল প্রিন্ট ও টার্সেল ওয়ার্কে তৈরি, ফলে ডিজাইনে থাকে আধুনিকতার ছোঁয়া। প্রতিটি শাড়ির সঙ্গে রানিং ব্লাউজ পিস থাকায় আলাদা করে ব্লাউজ খুঁজতে হয় না। দৈর্ঘ্য ও বহর যথেষ্ট হওয়ায় যেকোনো উচ্চতা ও গড়নের নারীদের জন্য মানানসই। অর্ডার করলে সারা বাংলাদেশে থানা লেভেল পর্যন্ত ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পাওয়া যায়, ফলে কেনাকাটাও ঝামেলামুক্ত।
অনেকে ভুল করে পলিয়েস্টার বা সিনথেটিক কাপড়কে তসর ভেবে কিনে ফেলেন। আসল তসর বা ব্লেন্ডেড তসর চেনার সহজ উপায় হলো, কাপড়ের একটুখানি সুতা বের করে পুড়িয়ে দেখা। যদি পোকার পোড়া গন্ধ আসে এবং সুতা ছাই হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন এতে রেশমের ছোঁয়া আছে। আর যদি প্লাস্টিকের মতো গন্ধ আসে, তাহলে সেটি পুরোপুরি সিনথেটিক।
প্রিমিয়াম ব্লেন্ডেড তসর শুধু একটি কাপড় নয়—এটি আধুনিক নারীর আত্মবিশ্বাস, স্টাইল ও ঐতিহ্যের প্রকাশ। মেহজিনের প্রিমিয়াম ব্লেন্ডেড তসর সংগ্রহে আপনি পাবেন আধুনিক ডিজাইন, আরাম, মান ও আভিজাত্যের অনন্য সমন্বয়। নতুন প্রজন্মের ফ্যাশন-সচেতন নারীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে সেরা পছন্দ হতে পারে।
তাই, সময় এসেছে নিজের ওয়ার্ডরোবকে নতুন করে সাজানোর—প্রিমিয়াম ব্লেন্ডেড তসর দিয়ে। কারণ, ফ্যাশন শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, এটি আত্মবিশ্বাসেরও প্রতীক। আর সে আত্মবিশ্বাস মেহজিনের ব্লেন্ডেড তসর শাড়িতে ফুটে ওঠে অনায়াসেই।
