মসলিন শাড়ি কি?
মসলিন বিশেষ এক ধরনের তুলার আঁশ থেকে প্রস্তুতকৃত সূতা দিয়ে বয়ন করা এক প্রকারের অতি সূক্ষ্ম কাপড় বিশেষ। মসলিন তুলার আঁশ থেকে প্রস্তুত করা এক প্রকারের অতি সুক্ষণ কাপড়। এটি প্রস্তুত করা হতো পূর্ব বাংলার সোনারগাঁও অঞ্চলে। মসলিনে তৈরী করা পোশাকসমূহ এতই সুক্কণ ছিলো যে ৫০ মিটার দীর্ঘ মসলিনের কাপড়কে একটি দেশলাই বাক্সে ভরে রাখা যেতো। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মসলিন উৎপাদন করা হত; তবে বাংলার প্রধান উৎপাদন ক্ষেত্র ছিল ঢাকা ও মুর্শিদাবাদ।
মসলিন শাড়ি নামকরণের ইতিহাস
মসলিন কি কেবলই কাপড়? এই বাংলাদেশের ঐতিহ্যের কথা বললে, ইতিহাসের কথা বললে মসলিনকে বাদ দেওয়ার কোনো উপায়ই যে নেই। এস. সি. বার্নেল ও হেনরি ইউল নামের দুজন ইংরেজ কর্তৃক প্রকাশিত অভিধান ‘হবসন জবসন'-এ উল্লেখ করা হয়েছে মসলিন শব্দটি এসেছে ‘মসুল' থেকে। ইরাকের এক বিখ্যাত ব্যবসাকেন্দ্র হল মসুল। এই মসুলেও অতি সূক্ষ্ম কাপড় প্রস্তুত হত। এই ‘মসুল' এবং ‘সূক্ষ কাপড়' -এ দুয়ের যোগসূত্র মিলিয়ে ইংরেজরা অতিসূক্ষ্ম কাপড়ের নাম দেয় ‘মসলিন'। অবশ্য বাংলার ইতিহাসে ‘মসলিন' বলতে বোঝানো হয় তৎকালীন ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে উৎপাদিত অতি সূক্ষ্ম এক প্রকার কাপড়কে।
প্রচলিত আছে, মসলিন শিল্পীদের আঙুল কেটে দেওয়ার পরে ঢাকাই মসলিন তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। এখন ভারতেও মসলিন তৈরি হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকাই মসলিনের বিশেষত্বই আলাদা। ঢাকাই মসলিনের শেষ প্রদর্শনী হয়েছিল লন্ডনে ১৮৫০ সালে। এর ১৭০ বছর পরে বাংলাদেশে আবার বোনা হলো সেই ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন কাপড়ের শাড়ি। ঠিক সে রকমই, যেমনটি বলা হতো—আংটির ভেতর দিয়ে গলে যায় আস্ত একটি শাড়ি। যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মসলিন শাড়ি পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু আপনাদের কথা মাথায় রেখে মেহজিন আকর্ষণীয় ডিজাইনের সেমি মসলিন শাড়ি তৈরির উদ্যোগ নেয়। কাস্টমারদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে মেহজিনই প্রথম নিজস্ব প্রোডাকশন হাউজের মাধ্যমে মসলিন শাড়ি তৈরি করা শুরু করে। হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী শাড়িকে বাচিয়ে রাখতে মেহজিনের প্রয়াশ কাস্টমারদের দ্বারা ভূয়সী প্রসংশার দাবিদার।
ঢাকাই মসলিন শাড়ি
ঢাকাই মসলিন তৈরির জন্য শাড়ির ঐতিহ্য রক্ষার্থে উঠেপড়ে লেগেছিলেন একদল গবেষক। তাঁদেরই ছয় বছরের চেষ্টা আর গবেষণা ফল দিয়েছে। তৈরি করা হয়েছে মসলিনের ছয়টি শাড়ি। যার একটি গবেষকেরা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু শুরুতে এক টুকরা ‘অরিজিনাল’ মসলিন কাপড় জোগাতে কলকাতা থেকে লন্ডন পর্যন্ত ছুটতে হয়েছে গবেষকদের। মসলিন বোনার সুতা যেই ‘ফুটি কার্পাস’ তুলার গাছ থেকে তৈরি হয়, সেই গাছ খুঁজে বের করা হয়েছে বিচিত্র সব পন্থা অবলম্বন করে। যান্ত্রিক সভ্যতার এ যুগে এসেও এই শাড়ি তৈরিতে তাঁতিদের হাতে কাটা ৫০০ কাউন্টের সুতাই ব্যবহার করতে হয়েছে।
মসলিন শাড়ি প্রকারভেদ
সাধারণত মসলিনের পার্থক্য করা হয় সূক্ষ্মতা, বুনন শৈলী ও নকশার পার্থক্যে। এসবের উপর ভিত্তি করে মসলিন শাড়িকে বিভিন্নভাগে ভাগ করা যায়ঃ
- মলবুস খাসঃ আঠারো শতকের শেষদিকে মলবুস খাসের মতো আরেক ধরণের উঁচুমানের মসলিন তৈরি হতো, যার নাম ‘মলমল খাস’। এগুলো লম্বায় ১০ গজ, প্রস্থে ১ গজ, আর ওজন হত ৬-৭ তোলা। ছোট্ট একটা আংটির মধ্যে দিয়ে এ কাপড় নাড়াচাড়া করা যেত। এগুলো সাধারণত রপ্তানি করা হত।
- সরকার ই আলাঃ বাংলার নবাব বা সুবাদারদের জন্য তৈরি হত এই মসলিন। সরকার-ই-আলা নামের জায়গা থেকে পাওয়া খাজনা দিয়ে এর দাম শোধ করা হত বলে এর এরকম নামকরণ। লম্বায় হত ১০ গজ, চওড়ায় ১ গজ আর ওজন হত প্রায় ১০ তোলা।
- ঝুনাঃ ঝুনা মসলিনও সূক্ষ্ম সুতা দিয়ে তৈরি হ্ত, তবে সুতার পরিমাণ থাকত কম। তাই এ জাতীয় মসলিন হালকা জালের মতো হত দেখতে। একেক টুকরা ঝুনা মসলিন লম্বায় ২০ গজ, প্রস্থে ১ গজ হত। ওজন হত মাত্র ২০ তোলা। এই মসলিন বিদেশে রপ্তানি করা হত না, পাঠানো হতো মুঘল রাজ দরবারে।
- শবনমঃ ভোরে শবনম মসলিন শিশিরভেজা ঘাসে শুকোতে দেয়া হলে শবনম দেখাই যেত না, এতটাই মিহি আর সূক্ষ্ম ছিল এই মসলিন। ২০ গজ লম্বা আর ১ গজ প্রস্থের শবনমের ওজন হত ২০ থেকে ২২ তোলা।
- ডোরিয়াঃ ডোরা কাটা মসলিন ‘ডোরিয়া’ বলে পরিচিত ছিল। লম্বায় ১০-১২ গজ আর চওড়ায় ১ গজ হত। শিশুদের জামা তৈরি করে দেয়া হত ডোরিয়া দিয়ে।
- জামদানিঃ মসলিনের উপর নকশা করে জামদানি কাপড় তৈরি করা হয়। জামদানি বলতে সাধারণত শাড়িকেই বোঝানো হয়। তবে জামদানি দিয়ে নকশি ওড়না, কুর্তা, পাগড়ি, রুমাল, পর্দা প্রভৃতি তৈরি করা হত। ১৭০০ শতাব্দীতে জামদানি দিয়ে নকশাওয়ালা শেরওয়ানির প্রচলন ছিল। এ ছাড়া, মুঘল নেপালের আঞ্চলিক পোশাক রাঙ্গার জন্যও জামদানি কাপড় ব্যবহৃত হত। প্রাচীনকালের মিহি মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে জামদানি শাড়ি বাঙালি নারীদের অতি পরিচিত।
বর্তমানে মসলিন
ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত মসলিন খানির দৈর্ঘ্যও ১০ গজ এবং চওড়া ১ গজ, এর ওজন মাত্র ৭ তোলা। তাহলে এটা সহজেই অনুমান করা যায় যে ঢাকার মসলিন মুঘল শিল্পের স্বর্ণযুগে আরো সুক্ষ্মভাবে তৈরি করা যেতো।
আপনার পছন্দের মসলিন শাড়ি অর্ডার করুন এখুনি।
আশালতা – প্রিমিয়াম সেমি মসলিন
কুমারিকা – প্রিমিয়াম সেমি মসলিন
দেবিকা – প্রিমিয়াম সেমি মসলিন
বন্যি – প্রিমিয়াম সেমি মসলিন
কাঠগোলাপ – প্রিমিয়াম সেমি মসলিন
ওমি – প্রিমিয়াম সেমি মসলিন
পার্বতী – প্রিমিয়াম সেমি মসলিন
তাহলে আর দেরি কেনো? এখুনি যোগাযোগ করুন
আপনার পছন্দের মসলিন শাড়ির স্টক শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করুন। অথবা, সরাসরি আমাদের শো রুমে ভিজিট করে, আকর্ষণীয় মূল্য ছাড়ে আপনার পছন্দের মসলিন শাড়ি সংগ্রহ করুন।
পছন্দের মসলিন শাড়ি অনলাইনে অর্ডার করতে আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার ও ঠিকানাসহ ইনবক্স করুন- m.me/mehzin.retail
অথবা, সরাসরি আমাদের আউটলেট থেকে পার্চেজ করুন।
আউটলেট লোকেশনঃ এফ এস স্কয়ার, লেভেল-৩, শপ নাম্বার
৪২৮-৪২৯, মিরপুর ১০ গোলচত্তর মেট্রোরেল স্টেশনের সাথে, মিরপুর ১০, ঢাকা।